গ্রীষ্মকালের খুবই জনপ্রিয় একটি ফল হল কাঁঠাল যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থানীয়। এই গাছ Moraceae পরিবারের অন্তর্গত এবং বৈজ্ঞানিকভাবে এটি Artocarpus Heterophyllus নামে পরিচিত। এই ফলটি সাধারণত ৪০ থেকে ৫০ পাউন্ড ওজনের ও ৩ থেকে ৪ ফুট লম্বা হতে পারে। এর ভেতরের অংশ আঁশযুক্ত হয়ে থাকে যা কাঁচা অবস্থায় (এঁচোড়) রান্না করে এবং পাকা অবস্থায় ফল (কাঁঠাল) হিসেবে খাওয়া হয়।
এই ফল কেবল তার আঁশযুক্ত মাংসের জন্যই নয় বরং এর ভিতরে থাকা বীজের জন্য খাওয়া হয়ে থাকে। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি6, ফোলেট, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম সহ পুষ্টি।
কাঁঠাল এর পুষ্টি উপাদান (১০০ গ্রাম)। Nutrient content of jackfruit.
- জলের পরিমাণ- 73.5%
- ক্যালরি- 95 kcal
- প্রোটিন- 1.72 g
- ফ্যাট- 0.64 g
- কার্বোহাইড্রেট- 23.2 g
- ফাইবার-1.5 g
- চিনি- 19.1 g
- গ্লুকোজ- 9.48 g
- ভিটামিন সি-13.7 mg
- ফোলেট- 24 ug
- ভিটামিন বি6- 0.32 mg
- ক্যালসিয়াম- 24 mg
- ম্যাগনেসিয়াম- 29 mg
- পটাশিয়াম- 448 mg
- ফসফরাস- 21 mg
কাঁঠাল খাওয়ার ১০ টি সুবিধা। 10 benefits of eating jackfruit.
১. শরীর ঠান্ডা রাখে: কাঁঠালে উচ্চ জলের পরিমাণ রয়েছে যা অতিরিক্ত গরমেও শরীরকে সতেজ ও ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও শরীরে সামগ্রিক জলের ভারসাম্য বজায় রাখে ও বডি ডিহাইড্রেট হওয়া থেকে রক্ষা করে।
২. ওজন নিয়ন্ত্রণ: এই ফলে কম ক্যালোরি, উচ্চ ফাইবার ও পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন থাকায় এটি পেটকে দীর্ঘসময়ের জন্য ভরাট রাখে এবং সামগ্রিক ক্যালরি গ্রহণ কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
৩. কার্বোহাইড্রেট উপাদান: এতে ভালো মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট ও গ্লুকোজ রয়েছে যা মূলত শরীরকে কোষ এবং স্নায়ুতন্ত্রের জন্য শক্তি উৎপাদন করতে সাহায্য করে এবং পরবর্তী সময়ের জন্য শক্তি সঞ্চয় করে রাখে।
৪. পেটের স্বাস্থ্য: এর মধ্যে উচ্চমাত্রায় ফাইবার রয়েছে যা হজম ক্ষমতা সঠিক রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ও নিয়মিত মলত্যাগের সহায়তা করে।
৫. প্রাকৃতিক শর্করা: পরিমিত পরিমাণে কাঁঠাল খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক থাকে।
৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: ভিটামিন C তে ভরপুর এই ফল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শরীরকে শক্তি উৎপাদন করতে সাহায্য করে, ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে, চুল ভালো রাখে এবং শরীর আরো অন্যান্য উপকারিতা প্রদান করে থাকে।
৭. হৃদয় স্বাস্থ্য: পটাশিয়াম এর মত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, উচ্চ রক্তচাপ হওয়া থেকে বাধা দেয় এবং কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে যা হার্টের জন্য উপকারী।
৮. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য: ক্যারোটিনয়েড ও ফ্ল্যাভোনয়েড নামক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে শরীরকে রক্ষা করে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের যোগী কমায়।
৯. হাড়ের সুরক্ষা: ম্যাগনেসিয়াম হাড়কে মজবুত ও শক্তিশালী করে তোলে এবং গুরুতর হাড় সম্পর্কিত অস্টিওপোরোসিস রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
১০. গর্ভাবস্থায় সুবিধা: ফোলেট ভ্রুনের বিকাশ করে এবং বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধে সাহায্য করে।