বিট এবং গাজর উভয়েই খুবই পুষ্টি সমৃদ্ধ সবজি। এই সবজিগুলি তাদের সুন্দর রং ও পুষ্টির জন্য পরিচিত। এই সবজি দুটি একত্রে খাওয়ার ফলে আপনি ঠিক কি কি সুবিধা পেতে পারেন জানুন। উভয় সবজিতে সমান পরিমাণ জলের উপাদান, লো ক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ও উচ্চ ফাইবার রয়েছে যা স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে নানা উপকার করে থাকে।
১০০ গ্রাম কাঁচা বিট ও গাজর এর পুষ্টি উপাদান
Beetroot Nutritions
জলের পরিমাণ- 87.6 g
ক্যালোরি- 43 g
প্রোটিন- 1.61 g
কার্বোহাইড্রেট- 9.56 g
ফাইবার- 2.8 g
চিনি- 6.76 g
ভিটামিন সি- 4.9 mg
ফোলেট- 109 ug
আয়রন- 0.8 mg
ক্যালসিয়াম- 16 mg
পটাশিয়াম- 325 mg
ম্যাগনেসিয়াম- 23 mg
Carrot Nutritions
জলের পরিমাণ- 88.3 g
ক্যালরি- 41 g
প্রোটিন- 0.93 g
কার্বোহাইড্রেট- 9.58 g
ফাইবার- 2.8 g
চিনি- 4.74 g
ভিটামিন সি- 5.9 mg
ফোলেট- 19 ug
ভিটামিন এ- 835 ug
বিটা ক্যারোটিন- 3480 ug
ভিটামিন কে- 13.2 ug
ক্যালসিয়াম- 33 mg
ম্যাগনেসিয়াম- 12 mg
পটাশিয়াম- 320 mg
আয়রন- 0.3 ug
বিট এবং গাজরের সম্মিলিত 13 টি পুষ্টিগত উপকারিতা। 13 nutritional benefits of Beetroot and carrots combined.
1. উচ্চ জলের পরিমাণ: বিট এবং গাজরে সমান পরিমাণে জলের উপাদান রয়েছে যা শরীরকে ঠান্ডা রাখে, সামগ্রিক জলের ভারসাম্য বজায় রাখে, চুল ও ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এছাড়াও এই উচ্চমাত্রায় জলের উপাদান পেট থেকে বিষাক্ত পদার্থ বার করে লিভারকে ভালো রাখতে ও শরীরকে দীর্ঘ সময় ধরে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে।
2. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা: এই উভয় সবজিতে কম ক্যালরি ও উচ্চ পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা পেটকে দীর্ঘ সময়ের জন্য পূর্ণতার অনুভূতি প্রদান করে থাকে এবং অতিরিক্ত খাবার খাওয়া কমিয়ে দিয়ে ওজন কমাতে ও নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
3. শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ: বিট এবং গাজরের মধ্যে প্রাকৃতিক উপায়ে শর্করা রয়েছে যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এটি ডায়াবেটিস যুক্ত রোগীদের জন্য বেশ ভালো এবং উপকারী।
4. রক্ত প্রদান ও সঞ্চয়: বিট এর মধ্যে থাকা নাইট্রেট গুলো রক্তনালী গুলোকে সঠিকভাবে চালনা করে এবং শরীরে রক্ত সঞ্চালন ও রক্তের প্রবাহকে আরো ভালো করে তোলে।
5. গর্ভাবস্থায় সুবিধা: এই সবজি গুলিতে ভালো মাত্রায়ের ফোলেট রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় একজন মা ও সন্তানের জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি, ভ্রূণের বিকাশ ও প্রসব ব্যথা নিরাময় করতে এই দুই সবজির রস খুবই উপকারী।
6. মাসিক ব্যথা নিয়ন্ত্রণ: নিয়মিত বিটের রস খেলে মাসিক ব্যথা, সঠিক ঋতুস্রাব ও মাসিকের সময় হওয়া অন্যান্য ব্যথা থেকে উপশম পাওয়া যেতে পারে।
7. পেটের স্বাস্থ্য: বিট লিভারকে অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং গাজর ও বিট এর মধ্যে থাকা ভালো মাত্রায় ফাইবারের কারণে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, কোষ্ঠকাঠিন্য ও নিয়মিত মলত্যাগে সাহায্য করে।
8. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: উভয় সবজিতে থাকা উচ্চমাত্রায় ভিটামিন সি, বিভিন্ন খনিজ উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ও শরীরকে আরো শক্তিশালী করে তোলে।
9. স্বাস্থ্য উপকার: বিট শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক রাখতে এবং সহনশীলতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
10. ত্বকের যত্নে: ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে ত্বককে ভালো রাখে এবং ত্বকের মধ্যে হওয়া ব্রণ, কালো দাগ, ফুসকুড়ি সহ আরো অন্যান্য সমস্যা দূর করে। এছাড়াও বিটা ক্যারোটিন সহ আরো অন্যান্য পুষ্টি ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে এবং অকালের ত্বকের চামড়া ঝুলে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
11. ক্যান্সার বিরোধী বৈশিষ্ট্য: এই সবজি দুটিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট ব্রেস্ট ক্যান্সার ও কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে এবং শরীরের সৃষ্টি হওয়া ক্যান্সারের কোষগুলো নষ্ট করে দেয়।
12. হাড় ও দাঁতের সুরক্ষা: ক্যালসিয়াম ভিটামিন কে এর মতন পুষ্টিতে ভরপুর সবজি দুটি হাড় ও দাঁত মজবুত ও শক্তিশালী করে তোলে।
13. চোখের উন্নতি: গাজরে উচ্চমাত্রায় বিটা ক্যারোটিন রয়েছে যা চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি অকালে চোখের দৃষ্টি হারানো ও ছানি সহ চোখের আরো নানা সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।
বিট এবং গাজর এই উভয় সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ ও আন্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে যা সম্মিলিতভাবে খাওয়ার ফলে আপনি এই সবকটি উপকারিতা পেতে পারেন। তবে যে কোন সবজি থেকে তার সম্পূর্ণ পুষ্টি পেতে গেলে তা পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে।