শীতকাল (Winter) এমন একটি মাস যে সময় বিশেষ কিছু রোগ এবং স্বাস্থ্যের অবস্থার পরিবর্তন দেখা দেয়। এই সময় প্রতিটি মানুষেরই নিজেকে এবং বাচ্চাদের বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করার জন্য একটি পুষ্টিকর খাদ্য তালিকা তৈরি করা দরকার। শীতকালে হওয়া বিশেষ এবং সাধারণ রোগ গুলো কি কি? কিভাবে সেই সব রোগ থেকে নিজেদের রক্ষা করবেন?
শীতে কি কি রোগ হয়? What diseases occur in winter?
ইনফ্লুয়েঞ্জা: এই ফ্লু সাধারণত শীতকালের শেষের দিকে হয়ে থাকে। মানুষ যখন বেশি সময় ঘরের ভেতর কিংবা আবদ্ধ পরিবেশে সময় কাটায় তখন এই ভাইরাসের প্রকোপ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে থাকে, সেক্ষেত্রে শরীরে নিয়মিত রোদ লাগানো প্রয়োজন।
(RSV) রেসপিরেটারি সিনসিশিয়ার ভাইরাস: RSV হল শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের একটি সাধারণ কারণ, বিশেষ করে এটি ছোট শিশুদের থেকে মধ্যবয়স্কদের হয়ে থাকে। শীতকালে এর প্রকোপ সব থেকে বেশি দেখা যায়।
স্ট্রেপ থ্রোট: গ্রুপ A স্ট্রেপ্টোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া, যা স্ট্রেপ থ্রোটের কারণ। এটি ঠান্ডার মাসগুলিতে হয়।
নিউমোনিয়া: ব্যাকটেরিয়াল নিউমোনিয়া এবং শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ শীতকালে বেশি হয়।
হাঁপানির সমস্যা: শুষ্ক বায়ু এবং ঠান্ডায় সংবেদনশীল ব্যক্তিদের মধ্যে হাঁপানির লক্ষণগুলো অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে যেতে পারে।
শীতকালে এই সব ধরনের রোগ গুলি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। যার কারণে মানুষ বুঝে উঠতে পারে না যে দৈনন্দিন জীবনে খাবারের মধ্যে কি অন্তর্ভুক্ত করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং শীতকালে হাওয়া বিশেষ কিছু রোগ থেকে শরীরকে বাজানো যাবে।
শীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর উপায়। Ways to boost immunity in winter.
পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার: বিভিন্ন ধরনের সবজি, ফল, গোটা শস্য, চর্বিহীন প্রোটিন খাওয়া দরকার। এগুলি প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ সরবরাহ করে, যা শরীরে ইমিউন ফাংশন সমর্থন করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ফলের উপকারিতা: প্রায় সকল প্রকার ফল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। তবে আপেল ও কমলা লেবু এমন একটি ফল যার মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন রয়েছে এবং প্রতিদিন একটি করে আপেল ও কমলা লেবু খাওয়া আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারক খাবার: ভিটামিন C (যেমন সাইট্রাস ফল, বেল মরিচ, স্ট্রবেরি) ভিটামিন D (যেমন চর্বিযুক্ত মাছ, দুধ) জিংক (যেমন বাদাম, বীজ, লেবু) আপনার খাবারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করুন।
পরিমাণ মতো জল পান করা: স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে গেলে নিয়মিত এবং পরিবার মতো জল পান করা খুবই জরুরী। এছাড়াও ভেষজ চা ও যেসব ফলে জলের পরিমাণ বেশি থাকে সেই ধরনের ফলের রস খাওয়া যেতে পারে।
পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতিটি মানুষেরই রাত্রে ৭ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। ঘুম আপনার শরীরের মেরামত এবং পুনরুৎপাদনের ক্ষমতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি আপনার ইমিউন ফাংশনকে আরো ভালো করে তোলে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
নিয়মিত ব্যায়াম: প্রতিটি মানুষেরই নিয়মিত ব্যায়াম করা খুবই প্রয়োজন। আজকালকার ব্যস্ত জীবনে সময় খুবই কম, তবে কিছুটা সময় বার করে শরীরকে ভালো রাখতে ব্যায়াম করতে হবে। মেডিটেশন আপনার মানসিক চাপ দূর করতে সাহায্য করে, যা স্ট্রোক এর সম্ভাবনা কমায়।
অ্যালকোহল এবং ধূমপান ত্যাগ করুন: অতিরিক্ত অ্যালকোহল এবং ধূমপান আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে ফেলতে পারে, যার ফলে আপনি দ্রুত অসুস্থ হতে পারেন।
নিজেকেপরিষ্কার রাখুন: নিয়মিত সাবান এবং জল দিয়ে হাত ধুয়ে নিন বিশেষ করে পাবলিক প্লেসে কিংবা কোন অসুস্থ ব্যক্তির আশেপাশে থাকার পর। সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে সিজনাল ফ্লু থেকে থেকে অনেক পরিমাণ বাঁচা যেতে পারে।
উষ্ণ থাকুন: শরীরকে সবসময় গরম রাখতে চেষ্টা করুন। যদিও ঠান্ডার সংস্পর্শে আসলে মানুষ অসুস্থ হয় না, তবে সামগ্রিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য উষ্ণ থাকা গুরুত্বপূর্ণ।