1. বেদানা: বেদানা বা ডালিম খুবই সুস্বাদু একটি ফল, তবে এটি শুধু স্বাদেই নয় বরং বিভিন্ন পুষ্টিতেও ভরপুর। এই ফল আপনার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সুবিধা পাবেন এবং এটি আপনার ওজন কমাতেও দ্রুত সাহায্য করবে। প্রতি ১০০ গ্রাম বেদানার দানায় প্রায় ৮৩ ক্যালোরি থাকে। বেশিরভাগ মানুষই ওজন কমানোর জন্য নিজেদের ডায়েট থেকে মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দিয়ে দেন (ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে)। তবে বেদানার রস এই মিষ্টি খাবারের বিকল্প হিসেবে আপনি আপনার ডায়েটি যুক্ত করতে পারেন। এতে থাকা ফাইবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে, কারণ এই ফাইবার আপনার পেটকে দীর্ঘ সময়ের জন্য ভরাট রাখবে যা সামগ্রিক খাবার গ্রহণ কমিয়ে দেয় এবং সাথে সাথে আপনার ওজনও নিয়ন্ত্রণ করে।
2. আপেল: আপেল যতটা সুস্বাদু ঠিক ততটাই পুষ্টিকর। একটি গোটা আপেল কিংবা আপেলের রস করে খাওয়া অভ্যাস আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে বিশেষ সাহায্য করতে। পারে প্রতি ১০০ গ্রাম আপেলে ৫৪ ক্যালোরি থাকে। এতে জলের পরিমাণ বেশি যা শরীরকে হাইড্রেট রাখতে পারে, শরীর হাইড্রেট থাকা ওজন কমানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আপেলে থাকা পেকটিন নামক ফাইবার হজমের সমস্যা দূর করে এবং পরিমাণ মতো আপেলের রস খেলে ওজন আর পেটের মেদ মোমের মতো কমতে শুরু করবে। তবে মনে রাখবেন অতিরিক্ত আপেলের রস বা আপেল খাওয়ার ফলে ক্যালরির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে যা ওজন বাড়িয়ে তুলতে এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বি তৈরি করে শরীরকে মোটা করে দিতে পারে।
3. পেয়ারা: যেসব ব্যক্তিরা ওজন নিয়ন্ত্রণ কিংবা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন তারা নিজেদের নিত্যদিনের খাবারে পেয়ারা যুক্ত করতে পারেন। একটি মাঝারি আকারের পেয়ারার মধ্যে ৩৭ ক্যালোরি এবং ৫ গ্রাম খাদ্যতালিকাগত ফাইবার থাকে, যা আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে বিশেষ সক্ষম। এছাড়াও পেয়ারায় উপস্থিত গ্লাইসেমিক সূচক শর্করার মাত্রা কমায় এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বি জমা হয় থেকে শরীরকে বাধা দেয়। একটি মিষ্টি পাকা পেয়ারা আপনার যেকোনো মিষ্টি জাতীয় খাবারে বিকল্প হিসেবে কাজ করবে।
4. কমলা লেবু: একটি মাঝারি আকারের কমলালেবুতে ৬৫- ৭০ ক্যালোরি থাকে যা সকালে জলখাবারে যুক্ত করার জন্য উপযুক্ত একটি ফল। প্রতিদিন এক গ্লাস করে কমলালেবুর জুস খেলে আপনার শরীর হাইড্রেট থাকবে এবং আপনার পেট ও মন দুটোকেই ভরাট রাখতে সাহায্য করবে। এছাড়া এতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সূচক রয়েছে, যা রক্তের শর্করা মাত্রা কমাতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেকোনো ডায়াবেটিস যুক্ত রোগীদের জন্য এই ফল গ্রহণযোগ্য। এবং কমলালেবুতে ভিটামিন সি-এর মাত্রাও বেশ ভালো পরিমাণে রয়েছে, যা শরীরের চর্বি বিপাক প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
5. সোশ্যাল মিডিয়া বা মানুষের মুখে সর্বদাই শোনা যায় যে কলা এমন একটি ফল যা ওজনকে বাড়িয়ে তুলতে খুবই সাহায্য করে। হ্যাঁ, এই কথাটা অবশ্য ঠিক। তবে কলা শুধুমাত্র ওজন বাড়াতেই নয় বরং ওজন কমাতেও সমান ভাবে সাহায্য করে। কলা ভিটামিন সি, পটাশিয়াম এবং ফাইবারের (3 গ্রাম) মতো পুষ্টি দ্বারা সমৃদ্ধ যা শরীরকে সন্তুষ্ট বোধ করাবে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতাকে কমিয়ে দেবে। এতে ১০০-১২০ ক্যালোরি থাকে যা পেটকে দীর্ঘসময়ের জন্য ভরাট রাখে এবং খাবার প্রবণতা কমিয়ে দেয়।
6. আঙ্গুর: প্রতি 100 গ্রাম আঙ্গুর ফলে ৬০-৭০ ক্যালরি থাকে। এটি সকালের জলখাবারের জন্য উপযুক্ত একটি ফল, যা আপনার সারাদিনের সামগ্রিক ক্যালোরি গ্রহণকে কমাতে পারে। এছাড়াও এতে থাকা ফাইবার হজমে সাহায্য করে পেটকে ভালো রাখে এবং পূর্ণতার অনুভূতি যোগায়। আঙ্গুর ফলের উচ্চ জলের পরিমাণ শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে যা ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও আঙ্গুর ফল মিষ্টি স্বাদের হয়ে থাকে, যা যে কোন উচ্চ ক্যালরিযুক্ত মিষ্টি খাবারের থেকে যথেষ্ট পুষ্টিকর এবং যেকোনো মিষ্টি জাতীয় খাবারের বিকল্প হিসেবে আপনি আঙ্গুর ফল বেছে নিতে পারেন।
7. আনারস: আনারস অতি সুস্বাদু একটি ফল যার অর্ধেকের বেশি প্রায় জলে ভরপুর, এই জল আমাদের শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে। প্রতি ১০০ গ্রাম আনারসের মধ্যে ৫০ ক্যালোরি থাকে এবং এতে উপস্থিত ফাইবার হজমে সাহায্য করে, শরীরকে পূর্ণতার অনুভূতি যোগায়, খিদে নিয়ন্ত্রণ করে ও সামগ্রিক ক্যালোরি গ্রহণকে কমিয়ে দেয়। এছাড়াও আনারসের মধ্যে বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ সহ আরো অন্যান্য পুষ্টি রয়েছে যেগুলো আমাদের ওজন কমানোর সময় শরীরে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।